বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:০৪ অপরাহ্ন

দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশ রপ্তানি হচ্ছে বাঘার পেয়ারা-বরই

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি:: রাজশাহীর বাঘার পেয়ারা ও থাই বরই এর প্রথম চালান ইতালিতে পাঠানো হয়েছে। ঢাকার রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স আদাব ইন্টারন্যাশনাল এর মাধ্যমে বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারী) বিকেল ৫টায় ১ মেঃ টন পেয়ারা ও ১০০ কেজি থাই বরই এর প্রথম চালান ইতালিতে পাঠানো হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপজেলা কৃষি অফিসার সফিউল্লাহ সুলতান বলেন, বুধবার (১৮ জানুয়ারী) উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামের শফিকুল ইসলামের সাদি এন্টারপ্রাইজের কার্যালয় থেকে ১ মেঃটন পেয়ারা ও বাউসার সাইন ইকবালের বাগান থেকে ১০০ কেজি থাই বরই ইতালিতে রপ্তানির জন্য ঢাকায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় শ্যামপুর সেন্ট্রাল প্যাকিং হাউজে পাঠানো হয়। সেখানে পেয়ারা ও থাই বরইগুলো মোড়কজাত এর পরে কার্গো ফ্লাইটে ইতালিতে পাঠানো হয়েছে।

কৃষি অফিসার বলেন, আরও বেশি পরিমাণে রপ্তানির জন্য ঢাকার বিভিন্ন রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে। গত বছর উপজেলার আম চাষিরা কন্টাক্ট ফার্মিংয়ের মাধ্যমে আম চাষ করে বিদেশে আম রপ্তানি করেছেন। এবার তাঁরা পেয়ারা ও বরই চাষ করে দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশে রপ্তানি করছেন।

সাদি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী শফিকুল ইসলাম জানান, কন্টাক্ট ফার্মিংয়ের মাধ্যমে বিদেশে রপ্তানির উপযোগী আম, পেয়ারা ও বরই বাঘায় উৎপাদিত হচ্ছে। গত মৌসুমে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে ৩০ মেট্রিক টন আম পাঠিয়েছেন। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে যথাযথ প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতায় কৃষকরা আধুনিক চাষ শিখে আমের পাশাপাশি একইভাবে পেয়ারা-বরই চাষ করেছেন।

এবার ৫০ বিঘা জমিতে পেয়ারা ও ৫০ বিঘা জমিতে বল সুন্দরী বরই চাষ করেছেন শফিকুল ইসলাম। এর মধ্যে উপজেলার চরাঞ্চলের পলাশীর গ্রামে ৩০ বিঘা জমি ইজারা নিয়ে পেয়ারা চাষ করেছেন।

বরই চাষি সাইন ইকবাল জানান, দুই বিঘা জমিতে বরই চাষ করেছেন। ডিসেম্বর থেকে বরই নামানো শুরু হয়েছে। প্রতিটি গাছ থেকে ৬-৭ মণ বরই সংগ্রহ করা যাবে। তারা জানান, বিঘা প্রতি পেয়ারা চাষে খরচ হয় ৫০ হাজার টাকা আর বরই চাষে খরচ হয় ৪০ হাজার টাকা। বাজার ভালো পেলে লাভ হবে। বর্তমানে বরই এর তুলনায় পেয়ারার বাজার ভালো বলে জানান তারা। খুচরা বাজারে প্রতিকেজি পেয়ারা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা আর জাত ভেদে প্রতি কেজি বরই বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা।

জানা যায়, একসময় কিস্তৃর্ণ চরের জমিতে তেমন কোনো আবাদ হতো না। এখন আম, বরই ও পেয়ারাসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ করা হচ্ছে পদ্মার চরে। ফলনও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। কৃষকের পাশাপাশি অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। একজন শ্রমিক প্রতিদিন ৩৫০-৪৫০ টাকা আয় করছেন।

কৃষি কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, উপজেলায় ১৫০ হেক্টর বরই ও ৩০৪ হেক্টর পেয়ারা চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ চাষ হয়েছে পদ্মার চরে। প্রতি হেক্টরে ৪৫ টন বরই উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সহযোগিতায় কয়েক বছর থেকে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে আম পাঠানো হচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com